বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:১৯ এএম
মোঃ মোশারফ হোসেন, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা : গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড
মো. মোশারফ হোসেন একজন প্রতিষ্ঠিত নন লাইফ বীমাবিদ। যিনি রাজনৈতিক অবস্থানে থেকেও কখনও কোন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করেননি। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি থেকে মার্কেটিং বিষয়ে -এ এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে পেশা হিসেবে মার্কেটিংকেই বেছে নেন। তিনি দেশে বিদেশে বীমা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষন গ্রহন করে বীমাখাতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। গুনী এ বীমাবিদ নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার খামারগাড়া গ্রামে
এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। যার সততা ও দক্ষতা আছে ভাগ্য তাদের সহায় হন এমনই অনুপ্রেরণায় আজ মোঃ মোশাররফ হোসেন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নন-লাইফ বীমা কোম্পানী গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ শীর্ষে আরোহন করতে সক্ষম হয়েছেন। আমরা ব্যাংক বীমা শিল্প পত্রিকার পক্ষ থেকে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের বর্তমান অবস্থা ও বীমা সেক্টরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানার আগ্রহ প্রকাশ করলে তিনি নন লাইফ বীমা সেক্টরের বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সাথে আলোচনা করেন যা সাক্ষাৎকার আকারে নিম্নে উপস্থাপন করা হলো-
ব্যাংক বীমা শিল্প : গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানের অবলিখন, বিপণন, গ্রাহক সেবা এবং ভবিষৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি?
মোঃ মোশাররফ হোসেন : অবলিখন বিভাগ বীমা কোম্পানীর মূল ভিত্তি বিধায় দক্ষ ও বিচক্ষন কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা অবলিখন কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত জরুরী। সঠিকভাবে অবলিখন করা না হলে বীমাকারী এবং বীমা গ্রহীতা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে বীমাযোগ্য শিল্পের অবস্থান, পণ্যের বৈশিষ্ট, পরিবহনের মাধ্যম, প্যাকিং এর প্রকারভেদ ইত্যাদি বিচার বিশ্লেষন করে সঠিক ঝুঁকি গ্রহনে বীমাগ্রহীতাকে সহযোগীতা করার ভূমিকা যথাযথ পালন করতে পারলে উভয়পক্ষ লাভবান হয়। দক্ষতার সাথে অবলিখন করতে পারলে বীমার পন্যের ঝুঁকি কম থাকে এবং ক্ষতিগ্রস্থ পন্যের দাবি বিনা ঝামেলায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা সম্ভব হয়। তাই আমরা আধুনিক অবলিখন কৌশল উদ্ভাবনের জন্য কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে থাকি।
বিপণন : বিপণন একটি জটিল প্রক্রিয়া কিন্তু গুরুত্বপূর্ন এবং এর ধরাবাধা কোন নিয়ম নেই। বিপণনের ক্ষেত্রে প্রায় প্রত্যেকটি বীমা কোম্পানী মার্কেটিং মিক্স (Product, Price, Place, Promotion) এর পাশাপাশি ব্যতিক্রমধর্মী কিছু পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। যে কোম্পানী যত বেশী ব্যতিক্রমী উদ্ভাবনী পদ্ধতি অনুসরণ করে ততবেশী সফলতা অর্জন করে। “প্রচারেই প্রসার” আমরা এই প্রবাদে বিশ্বাস করি। তাই আমরা প্রচারের জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করি। আমরা প্রতিনিয়ত মার্কেটিং-এ সক্ষম কর্মী সন্ধান, সংগ্রহ, নিয়োগ ও যথাযথ প্রশিক্ষন প্রদান করে থাকি। প্রশিক্ষনের ক্ষেত্রে প্রতিটি কর্মী যাতে উঁচু মানের নৈতিকতা অর্জন করে সমসাময়িক মার্কেটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারে সেদিকে যথেষ্ট লক্ষ্য রাখি। বিপণনের ক্ষেত্রে মার্কেটিং অফিসারগণ যাতে কোন রকম প্রলোভন ও প্রতারনামূলক কোন কিছুর আশ্রয় না নেয় সেই দিকে যথেষ্ট সচেতন দৃষ্টি রাখা হয়।
গ্রাহক সেবা : বিপণনের মত গ্রাহক সেবার কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। কাস্টমারদের আমরা মনে করি রাজা এবং তাদের আস্থাই আমাদের মূল শক্তি। তাই কাস্টমারের প্রত্যাশানুযায়ী চাহিদাপূরণ ও সন্তুষ্টি আমাদের মূল লক্ষ্য। IDRA-এর নিয়মকানুন মেনে গ্রাহকের নির্দেশিত সময়, স্থান ও পদ্ধতি অনুযায়ী আমরা আমাদের সেবা প্রদান করে থাকি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ IDRA, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বীমা সেক্টর সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের নিয়মকানুন মেনে বীমা ব্যবসা পরিচালনা করা আমাদের মূল লক্ষ্য। বীমা ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা দুইটি বিষয়ের উপর বেশী জোর দিচ্ছি- অবলিখন মুনাফা বৃদ্ধি ও শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান। আমরা সবাই জানি পাঠাও, ওভাই, উবার চালু হওয়ার কারণে স্বল্পশিক্ষিত হাজার হাজার বেকার যুবক কর্মসংস্থানের সন্ধান পেয়েছে। ফলে পাড়ার মোড়ে মোড়ে অহেতুক আড্ডা ও অরাজকতা কমার কারনে পাড়া মহল্লায় সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং বেকার সমস্যা অনেকাংশ কমেছে। তাই আমরা মনে করি শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত ছেলেমেয়েদের বীমা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন দিয়ে বীমা কোম্পানীর বিভিন্ন বিভাগে চাকুরী প্রদান করলে বেকার জীবনের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে এবং বীমা কোম্পানীও তাদের কর্মদক্ষতা ও মেধা কাজে লাগিয়ে লাভবান হবে।
বীমা ব্যবসায় বিশেষ করে মার্কেটিং-এ স্বল্পশিক্ষিত ছেলেমেয়েরাই যথাযথ প্রশিক্ষন পেলে তারাই ভাল করে। তাই ভবিষ্যতে যথাযথ প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ ও উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারী কর্মীবাহিনী গড়ে তুলে ব্যবসা পরিচালনা করে শেয়ার হোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান ও দেশের শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সুখী সুন্দর জীবন উপহার দেওয়ার জন্য আমরা সদা সচেষ্ট।
ব্যাংক বীমা শিল্প : বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষের সার্কুলার নং ৭৫ নন লাইফ বীমা কর্মীদের এজেন্টে রুপান্তর, সুবিধা অসুবিধা উভয় দিক সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি?
মোঃ মোশাররফ হোসেন : ৭৫নং সার্কুলার ঃ এজেন্ট এবং উন্নয়ন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের দেশে বীমা ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কমিশন প্রদান, ট্যারিফ লঙ্ঘন, ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি, ব্যবসা হাইড করা সহ নানা অনিয়মের আশ্রয় নেওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে সরকার, বীমা প্রতিষ্ঠানের মালিক, বীমা গ্রহীতা সহ বীমা সংশ্লিষ্ট সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আর এই সমস্ত দায়ভার শুধুই উন্নয়ন কর্মকর্তাদের উপর চাপানো হচ্ছে যাহা মোটেই সঠিক নয়।
অনেকেই অবচেতন ভাবে বীমা কোম্পানীর সাথে ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানীর তুলনা করেন যা আদৌ ঠিক নয়। বীমা কোম্পানীগুলো অর্থ নিয়ে নাড়াচাড়া করলেও ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানীর মত আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়। ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানী বিভিন্ন শ্রেনীর উদ্যোক্তাদের ঋন প্রদান করে। ফলে ঋন গ্রহনে ইচ্ছুক ব্যক্তিগণ ব্যাংকার ও লিজিং কোম্পানীর কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টির জন্য বিভিন্ন রকম পন্থা অবলম্বন করে থাকে। অপরদিকে ব্যবসা সংগ্রহের জন্য বীমা কোম্পানির কর্মকর্তাগণ সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের সন্তুষ্টির জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম অস্বস্তিকর পন্থার আশ্রয় নেয়। তাতে নির্ধারিত কমিশনের পাশাপাশি নানারকম সুযোগ সুবিধা- যেমন, অতিরিক্ত কমিশন, ট্যারিফ ভায়োলেশন, বকেয়া সুবিধা ইত্যাদি প্রদান করতে হয়। আমি মনে করি UMP -তে প্রতিটি পলিসির- পন্যের নাম, রেট ও রিস্ক উল্লেখ থাকলে রেট ভায়োলেশণ সমস্যা চিহ্নিত ও শাস্তি নিশ্চিত করা যাবে। নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রন ও IDRA কর্তৃক নির্ধারিত সিলিং এর মধ্যে ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারলেই অতিরিক্ত কমিশনের সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে। ভ্যাট-ট্যাক্স দাখিল তো এজেন্ট বা উন্নয়ন কর্মকর্তা করে না। কোম্পানীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভ্যাট ট্যাক্স ক্যালকুলেশন ও ডিপজিট করে। সুতরাং এই অনিয়মের জন্য শুধু উন্নয়ন কর্মকর্তাদের উপর দোষ চাপানো ঠিক নয়। ব্যবস্থাপনা কমিটি, কোম্পানীর সংশ্লিষ্ট সকলেই উপরোক্ত বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী। Solvency Margin সহ নিয়মিত তদারকি প্রয়োজনে IDRA -এর বিশেষ অঁফরঃ চালু করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। তবে Uniform Software চালু হলে উপরোক্ত সমস্যা গুলো সহজেই সমাধান হবে বলে আশা করি।
ব্যাংক বীমা শিল্প : ইতিপুর্বে ননলাইফ বীমা কোম্পানীর ব্যাংক হিসাবের লেনদেনে অনেকগুলো একাউন্ট ছিল যা সম্প্রতি আইডিআরএ তিনটি একাউন্টে করার অনুমোদন দিয়েছেন। এতে বীমা কোম্পানীগুলো কি ধরনের সুবিধা ভোগ করছে বলে আপনি মনে করেন?
মোঃ মোশাররফ হোসেন : তিনটি একাউন্টে প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগে তো ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর শত শত একাউন্ট ছিল এর কারনে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পক্ষে একাউন্ট গুলো সার্চ করে অডিট করা সহজ ছিল না। এখন অডিট আসলে সুবিধা এই যে ৩ টি এ্যাকাউন্টের হিসাব অল্প সময়ের মধ্যে দেওয়া সম্ভব হয় এবং নিরীক্ষা কাজ খুব সহজ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কোন রকম লুকোচুরি কিংবা ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকেনা।
ব্যাংক বীমা শিল্প : সার্কুলার নং নন-লাইফ ৮২/২০২০ থার্ড পার্টি বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইডিআরএ। বীমা কোম্পানীগুলো এতে কি ধরনের সুবিধা পাবে বলে আপনি মনে করেন?
মোঃ মোশাররফ হোসেন : থার্ড পার্টি বা এ্যাক্ট লায়াবিলিটি ইন্স্যুরেন্স আমাদের মত ৩য় বিশে^র দেশের জন্য একটি অপরিহার্য বীমা প্রোডাক্ট। উপমহাদেশের দেশগুলোয় থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স প্রোডাক্ট-কে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমাদের দেশে উন্নত সড়কের অভাব ও সুস্থ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, গাড়ীর ফিটনেস ও দক্ষ ড্রাইভারের অভাবে দূর্ঘটনার পরিমান অত্যন্ত বেশী। উপরন্তু দক্ষ ড্রাইভার এই সব গাড়ীতে খুব একটা দেখা যায় না। বয়স ও ব্যবহারের কারনে প্রত্যেকটি জিনিসের সক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। তাই আমরা সাধারনত রেজিষ্ট্রেশনের তারিখ থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত কোন গাড়ীর Comprehensive Insurance না করে 3rd Party Insurance করে থাকি। আমাদের দেশে আন্তঃজেলা চলাচলকারী গাড়ী ব্যতীত অধিকাংশ গাড়ীর Condition ভাল নয়। জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান উল্লেখযোগ্য হারে (সম্ভাব্য ৪%) উন্নীত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি বীমার আওতায় মটর সেক্টরে প্রিমিয়াম বৃদ্ধির জন্য থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স বিলুপ্ত করা হয়। এক্ষেত্রে প্রিমিয়াম বৃদ্ধি পেলেও দাবীর পরিমান বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রত্যাশিত অবলিখন মুনাফা অর্জন নাও হতে পারে।
ব্যাংক বীমা শিল্প : নন লাইফ বীমা কোম্পানীগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কি করনীয়?
মোঃ মোশাররফ হোসেন : জাতীয় বীমা নীতি হচ্ছে সফলতার চাবিকাঠি। জাতীয় বীমা নীতির উদ্দেশ্য হলো, গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে যুগোপযোগী নিয়মতান্ত্রিক ধারায় বীমাখাতকে চালিত করা। বীমাকারীর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে, আর্থিক শৃংঙ্খলা বজায় রেখে, পেশাদারিত্ব সৃষ্টি করতে হবে। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি প্রতিরোধ করে বীমা খাতকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে সময়োপযোগী দিকনির্দেশনার মাধ্যমে দেশের সকল স্তরের মানুষকে ও সম্পত্তিকে বীমার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বীমা সেবা সহজপ্রাপ্য এবং বিস্তৃত করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বীমার সুফল নিশ্চিত করা সম্ভব হলে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান উল্লেখযোগ্য হারে (সম্ভাব্য ৪%) বৃদ্ধি পাবে।
সরকারি ও বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ও দুর্ঘটনার ফলে সৃষ্ট জীবন ও সম্পদের অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি মোকাবেলা করা সম্ভব। বীমা শিল্পের আন্তর্জাতিক ঝুঁকি মোকাবেলায় বীমা শিল্পের আন্তর্জাতিক প্রমিত মান, কর্পোরেট গভর্নেন্স, সর্বাধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার, সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের মাধ্যমে বীমার সকল সম্ভাবনাকে সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যেতে পারে। বীমা কার্যক্রম নিবিড় ভাবে তদারকির উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে “বীমা অধিদপ্তর” বিলুপ্ত করে “বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ” (আইডিআরএ) গঠিত হলেও লোকবল ও সাংগঠনিক কাঠামোর অভাবে এটি এখনো কাঙ্খিত সুপারভাইজরি সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। ডিজিটালাইজেশন, লোকবল বৃদ্ধি, সাংগঠনিক কাঠামোর উন্নয়ন এবং Uniform Software ব্যবহারের মাধ্যমে বীমা শিল্পে সার্বিক উন্নয়নে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বীমা শিল্পে বিশেষ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে।
ব্যাংক বীমা শিল্প : বাংলাদেশে প্রায় ১০০এর উপরে সার্ভে প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা বীমা কোম্পানীর পক্ষে কাজ না করলে বীমা প্রতিষ্ঠান তাদেরকে কাজ দেয়না, এ সম্পর্কে আপনি কি বলবেন?
মোঃ মোশাররফ হোসেন : বীমা কোম্পানীর পক্ষে কাজ না করলে সার্ভেয়ারকে কাজ দেওয়া হয় না। এই বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত না। দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও সুসম্পর্কই কাজ পাওয়ার মূলমন্ত্র।
ব্যাংক বীমা শিল্প : সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে বীমা কোম্পানীর মুখ্য নির্বাহীদের সব সময় আইডিআরএ এবং বীমা কোম্পানীগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চাপে থাকতে হয়, অর্থ্যাৎ মুখ্য নির্বাহীরা স¦াধীন নয়, সেক্ষেত্রে আপনি কি বলবেন?
মোঃ মোশাররফ হোসেন : নন-লাইফ বীমা ব্যবসায় তীব্র প্রতিযোগীতা থাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের যে চাপের মধ্যে থাকতে হয় তা স্বাভাবিক ব্যাপার। মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার পদমর্যাদায় চাপ থাকবেই। যে যত বেশি দক্ষতা ও বিচক্ষনতার সাথে চাপ মোকাবেলা করতে পারবে সে তত বেশী সফলভাবে মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।
ব্যাংক বীমা শিল্প : আপনার সম্পর্কে বিশেষ করে বীমা পেশাকে কেন বেছে নিলেন?
মোঃ মোশাররফ হোসেন : বীমা পেশা দিয়েছে আমায় জীবিকার দিশা।
আমি ৯০ এর গণঅভ্যূত্থান নেতৃত্বদানকারী কেন্দ্রীয় সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের সদস্য ছিলাম। তৎকালীন এরশাদ সরকারকে উৎখাত করতে দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর আন্দোলন করতে হয়েছে। আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তখনকার বাস্তবতায় যুক্ত থাকার কারণে সরকারী চাকুরীর বয়সসীমা অতিক্রম হওয়ায় অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বর্তমান আমেরিকা প্রবাসী আমার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সহপাঠীর উৎসাহে জনতা ইন্স্যুরেন্সে যোগদানের মাধ্যমে বীমা পেশায় নিয়োজিত হই। কিন্তু জনতা ইন্স্যুরেন্সে যোগদানের পর থেকে বীমা পেশায় মন বসাতে পারিনি। কারণ বীমা পেশাকে সমাজের সকলেই অবহেলার চোখে দেখে। কিন্তু ২০০২ সালে বিশিষ্ট বীমাবিদ দিনাজপুরের কৃতি সন্তান গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরহুম আফতাব উদ্দিন শাহ এর কাছ থেকে জানতে পারি যে, রাজনীতির পাশাপাশি বীমা ব্যবসাকে পেশা হিসাবে গ্রহন করে বঙ্গবন্ধু একটি দেশকে স্বাধীন করেছে এবং তা জেনে নিজেকে গর্বিত ভাবা শুরু করি। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে রাজনীতির পাশাপাশি বীমা পেশাকে মনে প্রানে গ্রহন করে বিশিষ্ট বীমা ব্যক্তিত্ব গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমান সিনিয়র কনসালটেন্ট এ.বি.এম. নুরুল হক-এর অনুপ্রেরনা ও পরিচর্যায় দেশে বিদেশে প্রশিক্ষন নিয়ে নিজেকে একজন সফল বীমা কর্মী হিসেবে তৈরী করার চেষ্টা আজ পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছি।
আমার এই এই দীর্ঘ ২৭ বছরের অধিক বীমা পেশায় টিকে থাকার সংগ্রামে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করেছে তাদের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
পরিশেষে আমি বর্তমান প্রজন্মকে ঘরে বেকার বসে না থেকে বীমা সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষন গ্রহন করে এই সম্ভাবনাময় পবিত্র পেশায় সম্পৃক্ত হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য আহবান জানাচ্ছি।
এস এম নুরুজ্জামান, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এস এম নুরুজ্... বিস্তারিত
মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন শাহীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও স্বদেশ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী ল... বিস্তারিত
সাঈদ আহমেদ একজন উদ্যোক্তা ও শিল্পপতি হিসেবে ব্যবসায়িক সফলতা অর্জন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ চেক টেক... বিস্তারিত
সামাজিক নিরাপত্তা, সেবার মানুষিকতা নিয়ে দেশ বিদেশের প্রথিতযশা ব্যাক্তিত্বের সমন্বয়ে উভয় পুঁজিব... বিস্তারিত
বিশিষ্ট বীমা ব্যাক্তিত্ব মো. মোশারফ হোসেন নিজ কোম্পানির পাশাপাশি বীমা খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্... বিস্তারিত
হাসান তারেক, নন-লাইফ বীমা সেক্টরের অভিজ্ঞতালব্দ, হাসোজ্জ্যল ও সদালাপী একজন উদীয়মান বীমা ব্যক্তিত... বিস্তারিত
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে গ্রুপ জীবন ও স্বাস্থ্য বীমা চুক্তি স্বাক্ষর ... বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি ২০২৩ সালের ব্যবসা সফল করার লক্ষ্যে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পা... বিস্তারিত
বিবিএস নিউজ ডেস্ক: ১৮ নভেম্বর ২০২৩ শনিবার দিনব্যাপী জেনিথ ইসলামী লাইফ এর জেনিথ মেট্রো প্রজেক্টের ... বিস্তারিত
বিবিএস নিউজ ডেস্ক: ১৫ নভেম্বর ২০২৩ বুধবার দিনব্যাপী চাঁদপুর প্রেসক্লাব ভবনের এলিট চাইনিজ রেস্টুর... বিস্তারিত